ডক্টর ইউনূস প্রসঙ্গে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রেস কনফারেন্সে উত্থাপিত বিষয়ের প্রতিবাদ
ইউনূস সেন্টার প্রেস রিলিজ - ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
১. গ্রামীণ ব্যাংকের কোন প্রতিষ্ঠানে ড. ইউনূসের মালিকানা নেই। তিনি শুধু একজন পূর্ণকালিন কর্মকর্তা ছিলেন।
উত্তর: প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস নিজেই বার বার বিভিন্ন গণ মাধ্যমে বলেছেন যে, গ্রামীণ ব্যাংক সহ তাঁর সৃষ্ট কোন প্রতিষ্ঠানে তাঁর কোন শেয়ার/মালিকানা নেই। প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর সৃষ্ট কোন প্রতিষ্ঠান হতে কখনও কোন অর্থ বা সম্মানী নেননি। তিনি শুধুমাত্র গ্রামীণ ব্যাংকে থাকাকালীন সময়ে ব্যাংকের বেতন—স্কেল অনুযায়ী বেতন নিয়েছেন। উল্লেখ্য যে, গ্রামীণ ব্যাংক ব্যতীত তাঁর প্রতিষ্ঠিত কোম্পানীগুলি কোম্পানী আইন, ১৯৯৪ এর ২৮ ধারা অনুসারে গঠিত যাদের কোন ধরনের মালিকানা থাকে না। প্রফেসর ইউনূস, কোন বোর্ড সদস্য বা গ্রামীণ ব্যাংক এগুলির মালিক নন। এগুলির কোন মালিক নেই। স্পন্সর সদস্যদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই কোম্পানীগুলি গঠন করা হয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংক এই নট—ফর—প্রফিট কোম্পানীগুলির কোনটিরই মালিক নয়।
২. পরিচালনা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গ্রামীণ টেলিকম ও গ্রামীণ কল্যাণ—এর চেয়ারম্যান পদ থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সরানো হয়েছে।
উত্তর: গ্রামীণ কল্যাণ ও গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানী আইন, ১৯৯৪—এর ২৮ নং ধারা অনুযায়ী গঠিত অলাভজনক প্রতিষ্ঠান যাদের পৃথক আইনগত ও হিসাবগত সত্ত্বা রয়েছে। গ্রামীণ কল্যাণ ও গ্রামীণ টেলিকমের জন্মলগ্ন থেকে তিনি প্রতিষ্ঠান দুটির চেয়ারম্যান পদে নিয়োজিত আছেন। প্রতিষ্ঠান দুটির শুরুতে তাদের আর্টিকেলস্ অব এসোসিয়েশনে তাদের বোর্ডে চেয়ারম্যান ও কতিপয় বোর্ড সদস্য মনোনয়ন দেয়ার ক্ষমতা গ্রামীণ ব্যাংকের ছিল। পরবতীর্তে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রতিষ্ঠান দুটির পরিচালনার সুবিধার্থে কোম্পানী আইনের ২০ ধারা মোতাবেক গ্রামীণ কল্যাণের ৩য় অতিরিক্ত সাধারণ সভায় (৮ মে ২০১০ তারিখে অনুষ্ঠিত) গ্রামীণ কল্যাণের আর্টিকেলস অব এসোসিয়েশনের ৪৮ নং অনুচ্ছেদ ও ৩২ (iii) নং অনুচ্ছেদ সংশোধন করে তা ২৫/০৫/২০১১ইং তারিখে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়। এছাড়া গ্রামীণ টেলিকমের ২য় অতিরিক্ত সাধারণ সভায় (১৯ জুলাই ২০০৯ তারিখে অনুষ্ঠিত) গ্রামীণ টেলিকমের আর্টিকেলস অব এসোসিয়েশনের ৫১ নং অনুচ্ছেদ ও ৩৫ (iii) নং অনুচ্ছেদ সংশোধন করে আর্টিকেলস্ অব এসোসিয়েশন এর উক্ত ধারাসমূহ সংশোধন করা হয়। তাই গ্রামীণ ব্যাংক এখন এই সব প্রতিষ্ঠান দুটির চেয়ারম্যান/বোর্ড সদস্য মনোনয়ন দিতে পারে না। যে EGM—এ এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল সেখানে গ্রামীণ ব্যাংকের মনোনীত প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন এবং গ্রামীণ ব্যাংকের পক্ষে রেজুলেশনে পূর্বের মনোনয়নকৃত পরিচালকবৃন্দও স্বাক্ষর করেন। কোম্পানীসমূহের আর্টিকেলস অব এসোসিয়েশন অনুযায়ী এসব প্রতিষ্ঠানে গ্রামীণ ব্যাংক কোন পক্ষ নয় এবং এগুলোতে গ্রামীণ ব্যাংকের কোন মালিকানাও নেই। কোম্পানী আইন অনুযায়ী অতিরিক্ত সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক কোম্পানীগুলির আর্টিকেলস অব এসোসিয়েশন পরিবতন/সংশোধন হওয়ায় গ্রামীণ ব্যাংকের বোর্ড সভায় এই সব কোম্পানী দুটির চেয়ারম্যান মনোনয়নের কোন আইনগত এক্তিয়ার গ্রামীণ ব্যাংকের নেই।
৩. মানি লন্ডারিংয়ের আলামত পেয়েছি। এর মধ্যেও অনেক তথ্য সরিয়ে ফেলা হয়েছে। অনুসন্ধান শেষ হবার আগে কাউকে দোষী করছি না।
উত্তর: গ্রামীণ ব্যাংকে বরাবরের মত দেশের প্রথিতযশা ও খ্যাতিমান অডিটর রহমান রহমান হক, হোদা ভাসী চৌধুরী এন্ড কো:, একনাবীন, এ কাশেম এন্ড কোম্পানী কর্তৃক বার্ষিক অডিট করেছেন। তারা কোন সময়ে এই প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অনিয়ম হয়েছে এমন কোন মন্তব্য করেনি। এছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংক এর পরিদর্শক টীম এবং সরকার কর্তৃক গঠিত কমিটি ও কমিশন এ ধরনের কোন অনিয়ম খুঁজে পায়নি। তাছাড়া গ্রামীণ ব্যাংকের শুরু থেকে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের কর্মকালীন সময়ে গ্রামীণ ব্যাংক বোর্ড পরিচালিত হয়েছে সমাজের শ্রদ্ধাভাজন ও বিদগ্ধ ব্যক্তিদের দ্বারা যাঁরা সকলেই সরকার কর্তৃক নিযুক্ত ছিলেন, যাঁরা হলেন:
১. প্রফেসর ইকবাল মাহমুদ — ভাইস চ্যান্সেলর, বুয়েট
২. ড. মোঃ কায়সার হোসাইন — জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়
৩. ড. হারুনুর রশিদ — এডিশনাল সেক্রেটারী, অর্থ মন্ত্রণালয়
৪. ড. আকবর আলী খান — এডিশনাল সেক্রেটারী, অর্থ মন্ত্রণালয়
৫. প্রফেসর রেহমান সোবহান — এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ
৬. জনাব তবারক হোসেন — সেক্রেটারী, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
কাজেই মানি লন্ডারিং এর মতো অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীনই শুধু নয়, হাস্যকর এবং মানহানিকরও।
৪. টেলিকম ভবন সহ সবকিছু গ্রামীণ ব্যাংকের টাকা দিয়ে করা হয়েছে। এর বাইরে কিছু হলে সেটি আইনগত অপরাধ।
উত্তর: টেলিকম ভবনসহ সব কিছু গ্রামীণ ব্যাংকের টাকা দিয়ে করা হয়েছে বলে যে বক্তব্য দেয়া হয়েছে তা উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও ভিত্তিহীন। গ্রামীণ ব্যাংকের টাকা দিয়ে টেলিকম ভবন বা অন্য কোন স্থাপনা বা কোন প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করা হয়নি।
৫. গ্রামীণ কল্যাণ কিভাবে সৃষ্টি হলো ?
উত্তর: ১৯৯১ সালে টাংগাইলের শাহাজাহানপুর শাখার রত্নপুর গ্রামে ও ঘাটাইল শাখার বনপুর গ্রামে এক বছর ব্যাপী দারিদ্র বিমোচন ও সামাজিক উন্নয়নের উপর একটি গবেষণা করা হয়। এই গবেষণায় মূলত দুটি বিষয় উঠে আসে Ñ যারা পাঁচ বছর ধরে গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ নিয়ে কাজ করছে তাদের ৪৮% দারিদ্রসীমা অতিক্রম করেছে, ২৫% breakeven —এ আছে এবং ২৭% দারিদ্রসীমার নীচে রয়ে গেছে। যে ২৭% মানুষ দারিদ্রসীমার নীচে রয়ে গেছে তার মূল কারণ হলো স্বাস্থ্যগত সমস্যা।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস তখনই এ সমস্যা সমাধানে গ্রামীণ ট্রাষ্ট—এর মাধ্যমে ১৯৯৩ সালে পরীক্ষামূলকভাবে Rural Health Program (RHP)এর আওতায় ৮টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র চালু করেন। Rural Health Program (RHP)সফল হওয়ায় তিনি সামাজিক ব্যবসার তত্ত্বে দেশের প্রচলিত নিয়ম মেনে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য ১৯৯৬ সালে গ্রামীণ কল্যাণ সৃষ্টি করেন।
দারিদ্র নিরসনের জন্য স্বাস্থ্যগত সমস্যাগুলি সমাধানের লক্ষ্যে এবং গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্য ও কর্মীদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে উপরেল্লিখিত কর্মসূচিগুলি বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে ১৯৯৬ সালে কোম্পানী আইন, ১৯৯৪ এর ২৮ ধারা মোতাবেক “গ্রামীণ কল্যাণ” নামের একটি নট—ফর—প্রফিট কোম্পানী (লিমিটেড বাই গ্যারান্টি) প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৯৫ সালের পূর্ব পর্যন্ত ড. ইউনূসের উদ্যোগে গ্রামীণ ব্যাংক বিভিন্ন দাতা ও ঋণদানকারী সংস্থা থেকে সফট লোন ও অনুদান গ্রহণ করে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য IFAD, NORAD, Canadian CIDA, Swedish SIDA, KfW, GTZ ইত্যাদি। দাতা সংস্থাসমূহ তাঁদের Project Document —এ সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করেন যে, গ্রামীণ ব্যাংক ঋণ হিসেবে প্রদানের জন্য দাতা সংস্থার কাছ থেকে যে অর্থ গ্রহণ করবে তার ২ শতাংশ টাকা দিয়ে একটি স্বতন্ত্র তহবিল গঠন করবে যার নাম হবে Social Advancement Fund (SAF)। অর্থাৎ শর্ত মোতাবেক শতকরা ২% হারে দাতা সংস্থাসমূহ কর্তৃক প্রদত্ত অর্থের উপর সুদ ধার্য্য করে তা ব্যাংকের ব্যয় হিসেবে দেখিয়ে SAF সৃষ্টি করতে হবে। এরই প্রেক্ষিতে ১৯৯০ সালে SAF নামক তহবিল গঠন করা হয়। দাতা সংস্থাসমূহের শর্ত মোতাবেক সুদ প্রদান বাবদ SAF —এ ৫৩.৭৯ কোটি টাকা জমা হয়।
দাতা সংস্থাদের পরামর্শ ছিল এই ফান্ড থেকে সদস্য এবং কর্মীদের নানামুখী কল্যাণের জন্য এই টাকা ব্যয় করতে হবে।
এই SAF ফান্ড থেকে নানামুখী কল্যাণকর কাজ সম্পাদনের জন্য গ্রামীণ ব্যাংক এবং গ্রামীণ কল্যাণের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি মোতাবেক গ্রামীণ ব্যাংক SAF ফান্ড গ্রামীণ কল্যাণে হস্তান্তর হবে। হস্তান্তরের পর গ্রামীণ ব্যাংক ২০০৩ সাল পর্যন্ত একই ভাবে সুদ প্রদান করে যার ফলে SAF ফান্ডের আকার দাঁড়ায় ৬৯.৮২ কোটি টাকা যা গ্রামীণ কল্যাণ তার স্বাস্থ্য কর্মসূচি সহ বিভিন্ন কল্যাণমুখী কর্মসূচি বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে গ্রহণ করে। পাশাপাশি গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্য ও কর্মীদের কল্যাণের জন্য গ্রামীণ ব্যাংক কিছু কল্যাণমুখী কর্মসূচি শুরু করে যা গ্রামীণ ব্যাংকের সাথে গ্রামীণ কল্যাণ—এর মধ্যে সম্পাদিত চুক্তিতে উল্লেখ রয়েছে। এই সুনির্দিষ্ট কর্মসূচিগুলি হলো :
১. গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্য সন্তানদেরকে প্রদত্ত উচ্চশিক্ষা ঋণে সুদ সহায়তা দেয়া।
২. গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্য সন্তানদের ছাত্র বৃত্তি প্রদান করা।
৩. গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্যদের আপদকালীন তহবিলে ঘাটতি পূরণে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা।
৪. গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের চিকিৎসা ঋণে সুদ সহায়তা দেয়া।
৫. গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের মোটর সাইকেল ও গৃহস্থালী ঋণ এর সুদ সহায়তা দেয়া।
উল্লেখ্য যে, গ্রামীণ কল্যাণ সৃষ্টির পর থেকে জুন ২০২৩ পর্যন্ত গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্য সন্তানদের শিক্ষা ঋণের সুদ সহায়তা বাবদ ২৯২.৮৬ কোটি, প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত ভাল ফলাফলের জন্য এবং সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে উল্লেখযোগ্য পারফরম্যান্সের জন্য ৭১.৬৬ কোটি টাকা, আপদকালীন তহবিলের (গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্যদের মৃত্যুতে তাদের পরিবারকে সহায়তা প্রদানের জন্য) ঘাটতি পূরণের জন্য ২৭.৪০ কোটি টাকা এবং গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তা—কর্মচারীদের চিকিৎসা সুদ সহায়তায় বাবদ ১.৯৬ কোটি টাকা, কর্মকতার্—কর্মচারীদের গৃহস্থালী সামগ্রী ক্রয় ও মোটর সাইকেল ক্রয়ে সুদ সহায়তা বাবদ ১৬১.৯৭ কোটি টাকা সহ সর্বমোট ৫৫৫.৮৫ কোটি টাকা গ্রামীণ ব্যাংককে প্রদান করেছে। কর্মসূচিগুলি এখনও চলমান আছে। এছাড়াও গ্রামীণ কল্যাণ তার অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে গ্রামীণ ক্যালোডোনিয়ান নার্সিং কলেজের দরিদ্র ছাত্রীদের জন্য গৃহীত শিক্ষা ঋণের বিপরীতে সুদ ভর্তূকী দেয়া ছাড়াও ঋণ গ্যারান্টি দিয়ে থাকে। এছাড়াও গ্রামীণ কল্যাণ সমগ্র বাংলাদেশে ১৪৩ টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিচালনা করে আসছে যার মাধ্যমে প্রতি বছর ৭ লক্ষাধিক মানুষ স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করছে।
৬. গ্রামীণ টেলিকম প্রতিষ্ঠা করতে গিয়েও ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক হতে ২৪ কোটি টাকা অনুদান নিয়েছেন।
উত্তর ঃ গ্রামীণ টেলিকমের প্রতিষ্ঠা কালীন সময়ে নরওয়েজিয়ান দুতাবাস থেকে NORAD Fund নামে ১৯ লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তা পেয়েছে। এ ছাড়াও গ্রামীণ ব্যাংক এর SAF (Social Advancement Fund) হতে ৩০ কোটি টাকা ১১% হারে ঋণ গ্রহণের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়। উক্ত ঋণ চুক্তির আওতায় ১৯৯৫ থেকে ১৯৯৭ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ২৪.৭৭ কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করা হয়। ১৯৯৭ সালে SAF ঋণ চুক্তিটি গ্রামীণ ব্যাংকের বোর্ড সিদ্ধান্তের আলোকে গ্রামীণ কল্যাণের নামে ঋণ চুক্তি হয়। গ্রামীণ কল্যাণ থেকে ইক্যুইটি খাতে বিনিয়োগের জন্য গৃহীত ঋণের পরিমাণ ৫৩,২৫,৬২,৯৪১ টাকা, যা মোট বিনিয়োগের ৪২.৬৫%। এই বিনিয়োগে সহায়তা করার জন্য গ্রামীণ টেলিকম গ্রামীণ কল্যাণকে ২,৩৫৩ কোটি টাকা প্রদান করেছে। এছাড়াও পল্লীফোন কর্মসুচির আওতায় গ্রামীণ ব্যাংক কে ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত ৪৬৮ কোটি টাকা প্রদান করেছে এবং প্রতিমাসে ১.১২ কোটি টাকা (কম/বেশী) প্রদান করে আসছে।
যেহেতু গ্রামীণ ব্যাংক এর সাথে ঋণ চুক্তিটি গ্রামীণ কল্যাণে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাই এ বাবদ গ্রামীণ ব্যাংকে কোন অর্থ প্রদানের প্রযোজ্যতা নেই।
৭. গ্রামীণ কল্যাণ প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে ড.ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক হতে ৪৪৭ কোটি টাকা নিয়েছেন।
উত্তর ঃ SAF ফান্ড গঠন ও উক্ত ফান্ড দ্বারা বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য দাতা সংস্থা থেকে প্রদত্ত অর্থের ২% গ্রামীণ কল্যাণকে প্রদান করার ক্ষেত্রে হিসাব সংক্রান্ত বিষয়ে যুুক্তিযুক্ত করার জন্য ৩৪৭ কোটি টাকা গ্রামীণ ব্যাংক থেকে গ্রামীণ কল্যাণের নিজস্ব Books of Accounts —এ লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। যেখানে বাস্তবে কোন ব্যাংকিং ট্রানজেকশন বা কোন রকম আর্থিক লেনদেন হয়নি। যা গ্রামীণ কল্যাণ ও গ্রামীণ ব্যাংকের হিসাব বহিতে প্রতিফলিত আছে।
৮. প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৯৯০ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত গ্রামীণ ব্যাংকের বিভিন্ন খতিয়ান ধ্বংস ও বিলুপ্ত করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম সাইফুল মজিদ।
উত্তর: গ্রামীণ ব্যাংকে বরাবরের মত দেশের প্রথিতযশা ও খ্যাতিমান অডিটর রহমান রহমান হক, হোদা ভাসী চৌধুরী এন্ড কো:, একনাবীন, এ কাশেম এন্ড কোম্পানী কর্তৃক বার্ষিক অডিট করেছেন। তারা কোন সময়ে এই প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র, দলিল—দস্তাবেজ পাওয়া যায় নাই বা বিলুপ্ত করা হয়েছে এমন কোন মন্তব্য করেনি। এছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শক টীম এবং সরকার কর্তৃক গঠিত কমিটি এ ধরনের কোন নথিপত্র খঁুজে পাওয়া যায়নি এরূপ কোন অবজারভেশন দেয়নি। ড. ইউনূস ব্যাংক থেকে চলে আসার পর গ্রামীণ ব্যাংক কমিশন গঠন করা হয়েছে। গঠিত কমিটি এ প্রসঙ্গে কোন অভিযোগ আনেনি। ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ বছর আগেই গ্রামীণ ব্যাংক ছেড়ে আসার সময় তাঁর দায়িত্বভার যথাযথভাবে হস্তান্তর করে এসেছেন।
----