ইউনূস অক্সফোর্ডের তরুণদের একটি নতুন বিশ্ব কল্পনা ও তা নির্মাণ করতে উদ্বুদ্ধ করলেন।
নোবেল লরিয়েট প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস গত ২৯ এপ্রিল ২০১৬ অক্সফোর্ডে “বিশ্বের পুনর্গঠনে অর্থনীতির পুনর্গঠন” (Redesigning Economics to Redesign the World) বিষয়ক সম্মানজনক “লেডি মার্গারেট হল ডেনেকে লেকচার” (Lady Margaret Hall Deneke Lecture) প্রদান করেন।
“লেডি মার্গারেট হল” কলেজ ১৮৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় যখন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় নারীদের জন্য উন্মুক্ত ছিলনা। এই কলেজ প্রথমবারের মতো অক্সফোর্ডে নারীদের অধ্যয়নের সুযোগ তৈরী করে দেয়। একশত বছর পর এই কলেজ পুরুষ ছাত্রদেরও ভর্তির সুযোগ দেয়। টিউডর রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা এবং বৃত্তি ও জ্ঞানের বিখ্যাত পৃষ্ঠপোষক লেডি মার্গারেট বোফর্টের সম্মানে লেডি মার্গারেট হল কলেজের নামকরণ করা হয়।
লেডী মার্গারেট হল কর্তৃক চালু প্রথম “ডেনেকে লেকচার” প্রদান করেন জগদ্বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনষ্টাইন। বিশ্বখ্যাত চিন্তবিদদের এই লেকচার প্রদান করতে আমন্ত্রণ জানানোর ঐতিহ্য লেডী মার্গারেট হল এখনো চালু রেখেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপসহ পৃথিবীর সর্বত্র থেকে মানুষ এই ভাষণ শুনতে আসে।
তাঁর বক্তৃতায় প্রফেসর ইউনূস কল্পনার শক্তি নিয়ে কথা বলেন। তিনি তরুণদেরকে তাদের চিন্তায় সকল প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী নিয়ম-কানুন উপেক্ষা করতে বলেন। তাদের কল্পনায় একটি নতুন বিশ্ব তৈরী করা হয়ে গেলে তারা তা বাস্তবায়ন করতে তাদের জীবন উৎসর্গ করবে। এ-যুগে জন্ম নিয়ে এবং বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সুযোগ পেয়ে তারা পৃথিবীর প্রাধিকারপ্রাপ্ত তরুণ-তরুণীদের মধ্যে পড়ে। তাদের এই প্রাধিকার তখনই যথার্থ হবে যখন তারা যে-নতুন বিশ্ব আমরা সকলে তৈরী করতে চাচ্ছি তা প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দেবে।
সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে বর্তমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থার অনেক মৌলিক ও জটিল সমস্যার সমাধান সম্ভব বলে তিনি তাঁর বক্তৃতা শুনতে আসা দর্শক-পরিপূর্ণ হলে তাঁর যুক্তি তুলে ধরেন।
লেডি মার্গারেট হল কলেজের প্রিন্সিপাল ও দি গার্ডিয়ান পত্রিকার সাবেক সম্পাদক অ্যালান রাসব্রিজার প্রফেসর ইউনূসকে কলেজের আনুষ্ঠানিক নৈশভোজে আপ্যায়িত করেন। কলেজের সকল ছাত্র এই ভোজে অংশগ্রহণ করে।
একই সফরে প্রফেসর ইউনূস “অক্সফোর্ড গিল্ড”-এর ১৫০তম বার্ষিকী অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য প্রদান করেন। “অক্সফোর্ড গিল্ড” অক্সফোর্ডের ছাত্রদের সবচেয়ে পুরোন সংগঠন। প্রফেসর ইউনূস তাঁর বক্তব্যে অক্সফোর্ডের তরুণ ছাত্রদের একটি উন্নততর ও সমতাভিত্তিক পৃথিবী গড়ে তোলার এবং এ-কাজে প্রত্যেককে নিজ নিজ ভূমিকা পালন করতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।