X

Type keywords like Social Business, Grameen Bank etc.

ক্ষুদ্রঋণ এবং সামাজিক ব্যবসার ভবিষ্যৎ

ক্ষুদ্রঋণ এবং সামাজিক ব্যবসার ভবিষ্যৎ

ক্ষুদ্রঋণ এবং সামাজিক ব্যবসার ভবিষ্যৎ

মুহাম্মদ ইউনূস

ভারতীয় পত্রিকা ফিনানসিয়াল এক্সপ্রেস-এর সাংবাদিক কুমার শর্মাকে দেয়া সাক্ষাৎকার। সাক্ষাৎকারটি পত্রিকার মার্চ ৫, ২০২১ তারিখের সংস্করণে প্রকাশিত হয়েছে।

 

প্রশ্ন-১: ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে কাজ করছেন এমন অনেকেরই প্রশ্ন, এই মহামারী যা একটি বিধ্বস্ত নতুন যুগের সূচনা করেছে তাকে আপনি কীভাবে দেখছেন। ক্ষুদ্রঋণের ঋণ গ্রহীতাদের গ্রুপ মিটিংয়ে জমায়েত হওয়া অবশ্য করণীয়। এই নতুন পরিবেশে এটা নিরাপদ ও সহায়ক না হওয়ায় এই সামাজিক জামানতটিকে কীভাবে বহাল রাখা যায় এ বিষয়ে আপনি কী কিছু ভাবছেন?

 

প্রফেসর ইউনূস: এই নতুন মহামারী দরিদ্র মানুষদের ব্যাপক হারে তাদের জীবনের নড়বড়ে অবলম্বন থেকে ঝেড়ে ফেলে দিয়েছে, তাদের অনেকেই তাদের ভংগুর পেশা ও কর্মস্থল ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে। এটা ভিন্নভাবেও দেখা যায়। মনে রাখতে হবে যে, ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতাদের জন্য এটি প্রথম দুর্যোগ নয়। এমনিতেই বাংলাদেশ দুর্যোগের দেশ হিসেবে পরিচিত। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন পরিস্থিতি দিন দিন বাংলাদেশকে আরো খারাপ অবস্থার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বন্যার কারণে প্রতি বছর দেশের কিছু অংশ প্লাবিত হয়। এছাড়া নিয়মিত বিরতিতে সারা দেশে বড় ধরনের বন্যার প্রকোপতো রয়েছেই। কখনো কখনো ঘরের ছাদ বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। একটি বন্যায় খোদ ঢাকা নগরীতে নৌকা ও ইস্টিমারকে বাহন হিসেবে ব্যবহৃত হতে দেখা গেছে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সাইক্লোন ও জলোচ্ছ¡াস নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এগুলো নিয়মিত, এবং এই মহামারীর চেয়েও গুরুতর। এসব দুর্যোগে বাড়ি, পশুপাখি, বিষয়-সম্পদ, জীবন Ñ কিছুই রক্ষা পায় না।

 

ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতারা গত চল্লিশ বছর ধরে এসব নিয়মিত দুর্যোগের মধ্য দিয়েই টিকে থাকতে শিখেছে এবং ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলিকে আর্থিকভাবে সফলতার সাথে টিকিয়ে রাখতে শিখেছে। এসব সমস্যার মোকাবেলা করতে না পারলে ক্ষুদ্রঋণ বহু আগেই বিলুপ্ত হয়ে যেত। বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ক্ষুদ্রঋণের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে আপনি এসব কর্মসূচিগুলিকে নিজেদের এবং তাদের ঋণগ্রহীতাদের আস্থার সাথে এগিয়ে নিয়ে যাবার কর্মপদ্ধতিগুলি তাদের প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজনের মধ্যে দেখতে পাবেন। মহামারী আসার আগেই তাদের এটা মোকাবেলা করার কৌশল জানা ছিল। 

 

প্রশ্ন-২: ক্ষুদ্রঋণের মডেলটির একটি অন্যতম ভিত্তি ঋণ গ্রহীতাদের নিয়মিত সাপ্তাহিক বা মাসিক গ্রুপ মিটিং যেখানে নগদ টাকা আদায় ও বিনিময় করা হয়, গ্রুপ প্রশিক্ষণ পরিচালনা করা হয়, এবং অধিকাংশ ক্ষুদ্রঋণ সংস্থার জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থানে সবাইকে একত্রিত করে কিস্তি সংগ্রহ আর্থিকভাবে অনেক সাশ্রয়ী। মহামারীর পরিপ্রেক্ষিতে এই মডেলটিতে কোনো পরিবর্তন আসতে পারে বলে মনে করেন কি? যেমন ধরুন, ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের কর্মীকে গ্রুপ মিটিংয়ের পরিবর্তে প্রত্যেক ঋণগ্রহীতার কাছে আলাদা আলাদাভাবে যেতে হলে তা কি বেশী ব্যয়বহুল হয়ে যাবে না?

 

প্রফেসর ইউনূস: এগুলো নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা হতেই থাকবে। ক্ষুদ্রঋণের বয়স যত বাড়বে পুরনো পদ্ধতিগুলিতে অবশ্যই নানা সংস্কার আসবে। প্রাথমিক যুগের পদ্ধতিগুলো যুগ যুগ ধরে একই রকম থেকে যাবে তা কেউ প্রত্যাশা করে না।

 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পরিচালিত গ্রামীণ আমেরিকা এমন কিছু করেছে যা আগে কেউ চিন্তাও করেনি। করোনা মহামারীর মোকাবেলা করতে তারা ভার্চুয়াল কেন্দ্র মিটিং ও ডিজিটাল পেমেন্টের ব্যবস্থা করেছে। ১৪টি বড় শহরে গ্রামীণ আমেরিকার ২৪টি শাখা রয়েছে, যার মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠান বছরে ৫০০ মিলিয়ন (বা ৫০ কোটি) ডলারের বেশী ঋণ দিয়ে থাকে। এই শাখাগুলির অধীনে ঋণগ্রহীতাদের তিন হাজারের বেশী কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গত এক দশক ধরে এখানে একত্র হয়ে ঋণগ্রহীতারা সাপ্তাহিক কিস্তি দেয়াতে অভ্যস্ত হয়েছে।  এখন মহামারীর কারণে সব কিছু বদলে গেছে।  ব্যক্তিগত উপস্থিতি বাতিল করে এখন কেন্দ্র মিটিং ভার্চুয়ালি হচ্ছে। সবাই খুব খুশী। তারপর নগদ টাকার লেনদেন সম্পূর্ণ তুলে দেয়া হয়েছে। কোনো কেন্দ্রে আর নগদ টাকায় কোনো লেনদেন হয় না। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ঋণও হাতের কাছে আসছে, সাপ্তাহিক কিস্তিও দেয়া হচ্ছে। গ্রামীণ আমেরিকার সাথে লেনদেন করতে কাউকে সশরীরে কোথাও উপস্থিত হতে হয় না। ঋণগ্রহীতারা নিজেদের রান্নাঘর, বাজার, গাড়িতে বসে, রাস্তার মোড়ে Ñ অর্থাৎ যে যেখানে আছেন সেখান থেকেই কেন্দ্র মিটিংয়ে ভার্চুয়ালি যোগদান করছেন। গ্রামীণ আমেরিকার স্টাফদেরকে তিন হাজার কেন্দ্র মিটিং-এ সশরীরে উপস্থিত থাকতে হচ্ছে না। প্রধান কার্যালয়ের কর্মকর্তা কিংবা শাখা ব্যবস্থাপক যে-কোনো কেন্দ্র মিটিংয়ে তাৎক্ষণিকভাবে উপস্থিত হয়ে ঋণগ্রহীতাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনায় যোগ দিতে পারছেন। এসব পরিবর্তনের ফলে আদায় হার ৯৯ শতাংশে ফিরে এসেছে। কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাব শুরু হলে প্রথম ৬ মাসে গ্রামীণ আমেরিকার ৫২ জন ঋণগ্রহীতা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এর ফলে ঋণ বিতরণ ও আদায়ে বড় ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। এখন সব কিছুই মহামারী-পূর্ব অবস্থায় ফিরে এসেছে। (এ বিষয়ে আরো জানতে গুগলে “গ্রামীণ আমেরিকা” সার্চ করুন)। এখন গ্রামীণ আমেরিকা তাদের কর্মকান্ড সম্প্রসারণ করার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।

 

মহামারীর মধ্যেও গ্রামীণ আমেরিকা শিকাগোতে একটি নতুন শাখা খুলেছে, যা এই নগরীতে প্রতিষ্ঠানটির প্রথম শাখা। মহামারীর কারণে তারা একটি সাহসী পদক্ষেপ নেয়। তারা এই শাখাকে পুরোপুরি একটি ভার্চুয়াল শাখা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এমনকি তারা শাখাটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটিও ভার্চুয়ালি আয়োজন করে। যাঁরা গ্রুপ করতে আগ্রহী তাঁদের সাথে গ্রামীণ আমেরিকার কোন স্টাফ কখনো সরাসরি সাক্ষাৎ করেননি। সকল আলাপ-আলোচনা, প্রশিক্ষণ, এবং কেন্দ্র ও গ্রুপ মিটিং ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শিকাগোর এই ভার্চুয়াল শাখাটি প্রত্যক্ষ দেখা-সাক্ষাতের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত শাখাগুলির মতোই দক্ষভাবে পরিচালিত হবে বলে তারা নিশ্চিত। প্রয়োগকৌশলগতভাবে, এই ভার্চুয়াল শাখা পরিচালনার জন্য এর কোনো স্টাফকে শিকাগোতেই থাকতে হবে এমন কোনো কথা নেই Ñ পৃথিবীর যে-কোনো জায়গা থেকেই এটি পরিচালনা করা যেতে পারে। গ্রামীণ আমেরিকা এখন তার সকল শাখার ফিজিক্যাল অফিসগুলি বিলুপ্ত করার কথা ভাবছে; ফিজিক্যাল অফিসের আর কোনো প্রয়োজন আছে বলে তারা মনে করছে না। তারা নিশ্চিত যে মহামারীর পরেও তারা এব্যবস্থা অব্যাহত রাখবে।

 

প্রশ্ন-৩: ঋণগ্রহীতাদের সাথে আগের মতো সরাসরি দেখা-সাক্ষাতের বিষয়টি না থাকলে, অর্থাৎ নিয়মিত গ্রুপ মিটিং ও গ্রুপের চাপ না থাকলে ক্ষুদ্রঋণ সংস্থাগুলি কি তাদের বর্তমান প্রায়-শতভাগ আদায় হার ধরে রাখতে পারবে? এতে ঋণ আদায় হার কি অন্য সব ঋণ ব্যবসার মতো, যারা ৫ থেকে ৬ শতাংশ পুঁজি হারিয়ে থাকে, তাদের মতো হয়ে যাবে না?

 

প্রফেসর ইউনূস: ক্ষুদ্রঋণ পদ্ধতির প্রথম ও মৌলিক শিক্ষাটি হলো যে, ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচিগুলিকে যে-কোনো দুর্যোগে টিকে থাকতে শিখতে হবে। হাল ছেড়ে দেয়া ক্ষুদ্রঋণের জন্য কোনো সমাধান হতে পারে না এটা নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস করতে হবে। এজন্য তাদেরকে উদ্ভাবনশীল হতে হবে। কর্মসূচির ব্যর্থতার জন্য এটা-ওটার উপর দোষারোপ করে নিজেদের গা বাঁচানোর কোনো সুযোগ এই কর্মসূচির নেই।

 

প্রশ্ন-৪: সামাজিক ব্যবসা উদ্যোগের জন্য সরকার ছাড়া আর কোন ধরনের বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে পুঁজি সংগ্রহ করা যেতে পারে?

 

প্রফেসর ইউনূস: সরকারের অর্থ সাহায্যের উপর ভরসা করলে ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি মোটেই এগুতে পারতো না। সরকার নতুন আইন কাঠামো তৈরী করে এর স্বীকৃতি দিলেই সবচাইতে বড় উপকার হবে। একটি সম্পূর্ণ নতুন সামাজিক ব্যবসা ভিত্তিক আর্থিক পদ্ধতি সৃষ্টির জন্য আইন প্রণয়ন করা যেতে পারে। সরকার সামাজিক ব্যবসা ক্ষুদ্রঋণ ব্যাংক, সামাজিক ব্যবসা ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ড, সামাজিক ব্যবসা বিনিয়োগ তহবিল, সামাজিক ব্যবসা ইন্স্যুরেন্স ফান্ড ইত্যাদি গঠন করার জন্য আইন প্রণয়ন করে দিলেই এগুলি গড়ে ওঠার প্রক্রিয়া শুরু হবে।

 

প্রশ্ন-৫: কিন্তু বিনিয়োগকারীরা এসব কোম্পানী থেকে কোনো লভ্যাংশ পাবেন না। সেক্ষেত্রে কারা এগুলোতে বিনিয়োগ করবেন?

 

প্রফেসর ইউনূস: যাঁরা কোনো ফাউন্ডেশন বা ট্রাস্ট গঠন করতে চান তাঁদের জন্য এগুলো বিনিয়োগের ভাল জায়গা হতে পারে। তাঁরা বেকার ছেলে ও মেয়েদের উদ্যোক্তায় পরিণত করতে সামাজিক ব্যবসা ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ড সৃষ্টি করতে পারেন, অথবা দরিদ্র মহিলাদের ঋণ দিতে সামাজিক ব্যবসা ক্ষুদ্রঋণ ব্যাংক তৈরী করতে পারেন, ইত্যাদি। তাঁরা এখন এগুলোতে বিনিয়োগ করছেন না, কেননা এ ধরনের সুযোগ তাঁদের সামনে নেই। ব্যাংকিং-এর আইন কাঠামো ধনীদের ব্যাংক গড়ার উদ্দেশ্যে আগের আদলে রয়ে গেছে। গরীবদের ব্যাংক দরকার আছে Ñ এটা এখনো বিশ্বের আইনপ্রণেতাদের দৃষ্টিতে আসছে না।

 

প্রশ্ন-৬: বিনিয়োগকারী মুনাফা অর্জন করতে না-পারলে সামাজিক ব্যবসা টিকে থাকার কোনো ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যাবে কী?

 

প্রফেসর ইউনূস: সহজ জবাবটি এই যে, সামাজিক ব্যবসা টিকে থাকবে ও সম্প্রসারিত হবে যদি মানুষ এটা চায়। মানুষ সামাজিক ব্যবসা না চাইলে সামাজিক ব্যবসা টিকে থাকতে পারবে না। সামাজিক ব্যবসা একটা বিকল্প। জোর করে চাপানো কোনো পদ্ধতি নয়। মানুষ সমস্যা সমাধানের জন্য অস্থির হয়ে পড়েছে। সমাধান চাইলে সামাজিক ব্যবসার কাঠামোটি পরীক্ষা করার কথা মনে পড়বে। যতই সমাধান এবং সামাজিক ব্যবসা সমার্থক হয়ে উঠবে ততই সামাজিক ব্যবসা আমাদের ভবিষ্যৎ হয়ে দাঁড়াবে।

 

আমি সামাজিক ব্যবসার ধারণাটি নিয়ে যখন কথা বলি তখন মানুষ এটা পছন্দ করে, কিন্তু এটা করার আয়োজন তাদের সামনে নেই। এর কারণ প্রচলিত ব্যবসার জন্য আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো কখনোই তাদের সামনে এই আয়োজন হাজির করেনি। মানুষকে সামাজিক ব্যবসা করার প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজন করে দেয়া হলে এই ব্যবসা দিন দিন বাড়তে থাকবে। আমি নিশ্চিত, মানুষের চিন্তায় ও মনে এর অস্তিত্ব রয়েছে। কারণ মানুষ সমাধান চায়।

 

পৃথিবীতে খয়রাতি সাহায্যের পেছনে প্রতি বছর শত লক্ষ কোটি টাকা খরচ হয়। এর ভগ্নাংশও বিনিয়োগ ও ঋণ হিসেবে সামাজিক ব্যবসায়ে বিনিয়োগ করা গেলে এই ব্যবসায়ে বিনিয়োগ উপচে পড়বে। পুঁজির অভাবের বিষয়টি এক্ষেত্রে উত্থাপিত হবার কোনো সুযোগই নেই। সামাজিক ব্যবসাকে প্রমাণ করতে হবে যে, এটা সমাধান দিতে পারে।

 

অবশ্যই সরকারগুলি সামাজিক ব্যবসায়ে বিনিয়োগ করতে পারে যদি সরকার মনে করে যে, এতে জনগণের টাকা ব্যয় করলে এটা অন্য কোনো ব্যবসায়ের চাইতে ভাল ফল দেবে। সরকার অনেক কর্মসূচির দায়িত্বই সামাজিক ব্যবসাকে দিতে পারে। মানুষ যে-কারণে সামাজিক ব্যবসাকে বেছে নেবে ঠিক একই কারণে সরকারও সামাজিক ব্যবসাকে বেছে নেবে। যখন সরকারের লক্ষ্য হবে সমস্যার সমাধান, মুনাফা নয়, তাদের কাছে সামাজিক ব্যবসাই উত্তম বিকল্প হিসেবে বিবেচিত হবে।

 

কখনো কখনো মুনাফা-প্রত্যাশী ব্যবসাগুলিকে তাদের নিজস্ব ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করতে দেখা যায়। তারা কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার (সি.এস.আর) টাকা দান করার জন্য আলাদা করে রাখে। এখন তাদের সামনে আরেকটি বিকল্প আসলো Ñ তারা ফাউন্ডেশনের পরিবর্তে, অথবা ফাউন্ডেশনের পাশাপাশি, সামাজিক ব্যবসা সৃষ্টি করতে পারে এবং তাদের সি.এস.আর-এর টাকা সামাজিক ব্যবসায়ে বিনিয়োগ করতে পারে।

 

সামাজিক ব্যবসা বাজার থেকেও প্রচলিত নিয়ম ও শর্তে ঋণ সংগ্রহ করতে পারে। আমার ব্যবসা সামাজিক ব্যবসা হলে আমি বাজার থেকে ঋণ নিতে পারবো না Ñ এমন কোনো কথা নেই। আমি যদি সামাজিক ব্যবসা হই, তার মানে এই নয় যে, আমি কোনো মুনাফা-প্রত্যাশী ব্যবসার সাথে ব্যবসা করতে পারবো না। আমি তাদের পণ্য কিনতে পারি, তাদের কাছ থেকে সেবা ক্রয় করতে পারি, তাদের কাছে আমার নিজের পণ্য বিক্রি করতে পারি, এবং তাদের সাথে সকল ধরনের ব্যবসা করতে পারি। শুধু একটি বিষয় Ñ আমাকে নিশ্চিত করতে হবে যে, আমার ব্যবসার উদ্দেশ্য  সমাজের কোনো নির্দিষ্ট সমস্যার সমাধান করা, এবং আমি, ব্যবসাটির মালিক, ব্যক্তিগতভাবে এই ব্যবসা থেকে কোনো মুনাফা নেব না।

 

সামাজিক ব্যবসা নিয়ে যতই আলোচনা হবে এটা পরীক্ষা করে দেখার একটা আগ্রহ সৃষ্টি হবে। সেই পরীক্ষায় টিকে গেলেই সামাজিক ব্যবসার ভিত্তি রচনা হবে।

 

অনুবাদ: কাজী নজরুল হক

Related

Bangladeshi Young Automechanics Heading for Japan

Bangladeshi Young Automechanics Heading for Japan
Yunus Centre Press Release (March 18 2023)   Eleven automechanic students, graduated from Japan Automechanic School (JAS) in Dhaka, are all set to leave for Japan to start their career as automechanics. These students of the fifth graduating class of the school a...

Grameen America crosses US$ 3 billion in loans invested to low income women entrepreneurs in the US

Grameen America crosses US$ 3 billion in loans invested to low income women entrepreneurs in the US
Press Release (January 31, 2023)   Grameen America Inc has reached a new milestone of investing $3 billion in affordable business capital to women of color in financially underserved communities across the United States. Grameen America is a 501(c)(3) nonprofit...

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দরিদ্র নারী উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়ে গ্রামীণ আমেরিকার বিনিয়োগ ৩০০ কোটি ডলার ছাড়ালো

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দরিদ্র নারী উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়ে গ্রামীণ আমেরিকার বিনিয়োগ ৩০০ কোটি ডলার ছাড়ালো
প্রেস রিলিজ ( জানুয়ারী ৩১, ২০২৩ )   মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দরিদ্র কৃষ্ণবর্ণ নারী উদ্যোক্তাদের ক্ষু...

Karl Kübel Prize of Germany awarded to Nobel Laureate Professor Muhammad Yunus

Karl Kübel Prize of Germany awarded to Nobel Laureate Professor Muhammad Yunus
Press Release 03 October 2022 “A GAME CHANGER AND HOPE CREATOR" - Karl Kübel Prize of Germany awarded to Nobel Laureate Professor Muhammad Yunus On September 30,  the Karl Kuebel Foundation for Child and Family awarded Nobel Peace Prize winner P...

নোবেল লরিয়েট প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস জার্মানীর মর্যাদাপূর্ণ “কার্ল কুবল পুরস্কার” পেলেন

নোবেল লরিয়েট প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস জার্মানীর মর্যাদাপূর্ণ “কার্ল কুবল পুরস্কার” পেলেন
প্রেস রিলিজ “পরিবর্তনের পথিকৃত ও আশা-স্রষ্টা”নোবেল লরিয়েট প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস জার্মানীর মর্...

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রফেসর ইউনূসের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহের জবাব

  সম্প্রতি (জুন ২০২২) মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নোবেল লরিয়েট প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে কিছু গ...

Yunus Speaks at Parliamentary Breakfast in the German Parliament

Yunus Speaks at Parliamentary Breakfast in the German Parliament
Press Release Caption for Photo 1 : With Prof. Dr. Rita Suessmuth (born 1937), a long time friend and supporter of Yunus's programmes, came to meet Professor Yunus to hear him speak. She is the former two term President (Speaker) of German Parliament, November 1988 &...

Mahathir Mohammad Invites Professor Yunus for a Discussion

Mahathir Mohammad Invites Professor Yunus for a Discussion
Yunus Centre Press Release (March 30, 2022) Nobel Laureate Professor Muhammad Yunus and Former Prime Minister of Malaysia Dr. Mahathir Mohammad greeting each other on March 28, 2022 during Professor Yunus’ 3 day visit to Malaysia. Nobel Laureate Professor Muha...

ড. মাহাথির ও প্রফেসর ইউনূসের মধ্যে বৈঠক

ড. মাহাথির ও প্রফেসর ইউনূসের মধ্যে বৈঠক
ইউনূস সেন্টার প্রেস রিলিজ (৩০ মার্চ ২০২২)  মার্চ ২৮, ২০২২ কুয়ালালামপুরে ড. মাহাথির মোহাম্মদের কার্যা...

মালয়েশিয়ার আলবুখারী আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ডিগ্রি প্রদান করলেন প্রফেসর ইউনূস

মালয়েশিয়ার আলবুখারী আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ডিগ্রি প্রদান করলেন প্রফেসর ইউনূস
ইউনূস সেন্টার প্রেস রিলিজ (২৮ মার্চ ২০২২) ছবির ক্যাপশন: আলবুখারী আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্...